কাল সার্পযোগ আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?


কাল সার্পযোগ আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?

অনেকদিন ধরেই আমার কাছে অনুরোধ আসছে কাল সার্পযোগ নিয়ে কিছু মতামত প্রকাশ করার, বিগত ৪দিনের ছুটিতে আমি ভাবছিলাম কি লিখবো, কিন্তু কিছু খুঁজে পেলাম না, কাল সর্প যোগ নিয়ে আমার বিশেষ কোনো মতামত নেই, পরাশর মনি কালসর্প যোগকে ১২ ভাগে ভাগ করে গেছেন, বিভিন্ন বই পড়লেই খুঁজে পাবেন তার কি কি ফলাফল। আমি একজন খুব সাধারণ ছাত্র জ্যোতিষ বিদ্যার,তাই আমার লেখা বা মতামতের কোনো অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে আমার জানা নেই।

বর্তমানে বিভিন্ন জ্যোতিষ কাল সর্পকে একটু modified করেছেন, তবে তাদের এই মডিফিকেশন আমি কোনো বইতে খুঁজে পাইনি, তাই আমার জানা নেই, যেমন চন্দ্র ভঙ্গ, মঙ্গল ভঙ্গ, লগ্ন ভঙ্গ, বৃহস্পতি ভঙ্গ আরো অনেক কিছু ভঙ্গ কালসর্পযোগ।
আমার জানার পরিধি ভীষণ কম তাই, অনেক কিছুই জানি না, আমার না জানাকে মার্জনা করবেন পাঠকগণ।

কাল সর্পযোগ নিয়ে যা লেখা আছে, বা যা প্রচলিত আছে, তাতে এক কথায় বলা যেতে পারে অভিশাপ, ৪২ বছর পর্যন্ত এক্টিভ থাকে, কুন্ডলী মেরে বসে থাকে আপনার জীবনে, তারপরে ক্লান্ত হয়ে চলে যায়, কোথায় যায় সেটা আমি জানি না।

note: আমার মনে হয় কালসার্পযোগ যাদের থাকে তারা প্রকৃত fighter হয়ে থাকেন, জীবনে ওঠা নামা সকলের থাকে, কিন্তু এই সকল জাতক কোনোদিন হার মানে না। ভীষণ পরিমানে লড়াই করতে জানেন।

এই টুকুই আমি কালসর্প যোগ নিয়ে আপনাদের বলতে পারবো, এর থেকে বেশি কিছু জানি না আমি।

আমার কাছে হাজার হাজার এমন সেলেব্রিটি এর কুন্ডলী আছে, যাদের কালসর্প যোগ আছে, এবং তারা তাদের জীবনে খুবই প্রতিষ্ঠান পেয়েছে।

আসুন আমরা এমন একজনের কুন্ডলী দেখি তার কালসর্পযোগ আছে।

ধানুষ ২০০২ সালে তার পিতা কস্তুরি রাজ পরিচালিত থুল্লুভাড় ল্লামাইয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তী দশবছরে ধানুষ ২৫ টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। হোয়াই দিজ কোলাভেরি দি গানের মাধ্যমে ধানুষ আন্তর্জাতিক পরিচয় লাভ করেন। এটাই কোন ভারতীয় গান যা ইউটিউবে সর্বপ্রথম ১০০০ লাখ বার দেখা হয়েছে।ধানুষ ৩ বার ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুষ্কার এবং ৬ বার ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার লাভ করেন।

এখানে দেখা যাচ্ছে ধনুষের পূর্ণ কালসর্পযোগ আছে কিন্তু সে তার জীবনে প্রতিষ্টিত হয়েছেন ৪২ বছরের আগেই। মজার ব্যাপার একটা উনি যেদিন কোলাভেরি গানটা রিলিজ করেন সেই সময়টাও ছিল বৃহস্পতি ভঙ্গ কালসর্প যোগ। ছবিতে পাঠকগণ দেখতে পাবেন। তারমানে এখানে সম্পূর্ণ ভাবে স্পষ্ট যে ধনুষের জীবনে কালসর্পযোগ কাজ করেনি।

উল্টোদিকে আমি আপনাদের আরো একটা কুন্ডলী দেখছি, ছবিতে দেখুন।

1974 india all out for 42 in lords test cricket in 77 min.
মাত্র ৭৭মিনিটে ৪২ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল সেদিন, এর থেকে ভারতের কাছে লজ্জার ইতিহাস আছে বলে আমার মনে হয়না।
অনেকেই এই হোৱাৰী চার্ট দেখে বলতেই পারেন এই কালসর্প যোগের জন্য এমন ভয়াবহ ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, যেমন ভাবে, আমাদের ভারতের জন্ম কুন্ডলীতে কালসর্প যোগ আছে।

এগুলো সবকিছুই তর্কের পটভূমি।
সত্যজিৎ রায়ের চন্দ্র ভঙ্গ কালসর্পযোগ ছিল, মাত্র ৩৩ বছরে উনি পথের পাঞ্চালি সিনেমাটা বানিয়েছিলেন। তারমানে ৪২ বছরের ব্যাপারটা কিন্তু এখানে ঠিক ঠাক দাঁড়ালো না। কি পাঠকগণ দেখে তো তাই মনে হচ্ছে।

শচীন টেন্ডুলকার এর লগ্ন ভঙ্গ কালসর্পযোগ আছে, ১৪ বছরে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন।

দিয়েগো ম্যারাডোনার মঙ্গল ভঙ্গ কালসর্পযোগ ছিল, ২৪ বছরে বিশ্বকাপ পেয়েছিলেন।

শ্রী রামকৃষ্ণের বৃহস্পতি ভঙ্গ কালসর্পযোগ ছিল, উনি একজন ভগবান, ওনার কথা আলোচনার ঊর্ধ্বে।

রোহিত শর্মার শনি ভঙ্গ কালসর্পযোগ আছে।
আপনাদের নতুন করে আমার আর কিছু বলার নেই।

শেষ আরেকজনের নাম আপনাদের আমি বলে যাই, মেসি যিনি পোলিও রুগী থেকে উঠে আজকে অতি মানব ফুটবলের জগতে তার শনি ভঙ্গ কালসর্পযোগ আছে।

note: আগেও বলেছি, আবার বলছি। কালসর্পযোগ যাদের আছে সেই সকল মানুষ জীবনে লড়াই করতে পারে ভীষণ। তারপর তার জীবনে দশা, অন্তর্দশা, ট্রানজিট এসব দেখার প্রয়োজন আছে। কালসর্পযোগ থাকা কোনো অভিশাপ হতে পারে না, আমার কাছে এটা একটা আশীর্বাদ।
এবার বাকিটা সাধারণ মানুষ আর পাঠকগনদের ওপর ছেড়ে দিলাম।

সম্রাট বোস
7890023700